কিওয়ার্ড কি?
আমরা যখন কোন কিছু সম্পর্কে জানতে চাই তখন সেটা সম্পর্কে কাউকে জিজ্ঞেস করি আর তা না হলে সেই বিষয়ে কোন কিছু লিখে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে search করি, আমরা যেটা লিখে search করি সেটাই হলো কিওয়ার্ড ( Keyword )। অর্থাৎ কোন নির্দিষ্ট শব্দ বা শব্দের সমষ্টি যেগুলো সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করা হয় সেই শব্দগুলোকে কিওয়ার্ড বলে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় আপনি যদি গুগলে CPA Marketing লিখে সার্চ করেন তাহলে এই CPA Marketing শব্দটি হলো একটি কিওয়ার্ড।
কিওয়ার্ড রিসার্চ কি?
কিওয়ার্ড সম্পর্কে জানলেন তাহলে এবার আসি কীওয়ার্ড রিসার্চ মানে কি এই বিষয়ে। রিসার্চ (Research) বলতে আমরা গবেষণা, অনুসন্ধান কিংবা তদন্ত এই ধরনের কোন কিছু করাকে বুঝি। এসইও এর ভাষায় বলতে গেলে যখন কোন কীওয়ার্ডকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় রিসার্চ করে ওয়েবসাইটের আর্টিকেলের নির্দিষ্ট জায়গায় ব্যবহারের জন্য নির্ধারণ করা হয় তখন তাকে কীওয়ার্ড রিসার্চ ( Keyword Research ) বলে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে ব্লগ বা ওয়েবসাইটের কন্টেন্টের জন্য এমন কিছু শব্দ নির্বাচন করা যা মানুষ গুগল কিংবা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে বেশি পরিমাণে সার্চ করে এবং যেটা আপনার নিশে ব্যবহারের ফলে ভালো ফলাফল প্রদান করার সম্ভাবনা থাকে।কিওয়ার্ড রিসার্চ কেন করবেন?
ভিজিটর ছাড়া ওয়েবসাইট দর্শক ছাড়া কনসার্টের মতো আপনার ওয়েবসাইট যতই সুন্দর ও দরকারি হোক না কেন যদি কোন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিট না করে তাহলে সেটার কোন মূল্য নেই। আপনাকে এমন কিছু করতে হবে যার ফলে মানুষ আপনার ওয়েবসাইট পরিদর্শন করতে আসবে। আর এজন্য আপনাকে এসইও করে আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের উপরের দিকে নিয়ে যেতে হবে, তবে এসইও করার পূর্বে আপনাকে কীওয়ার্ড রিসার্চ করে নিতে হবে তা না হলে আপনি পরিপূর্ণ ভাবে এসইও করতে পারবেন না।কিওয়ার্ড কত প্রকার?
কিওয়ার্ড তিন প্রকার যথা:-- শর্ট টেইল কিওয়ার্ড [ Short Tail keyword ]
- লং টেইল কিওয়ার্ড [ Long Tail keyword ]
- এলএসআই কিওয়ার্ড [ LSI Keyword ]
শর্ট টেইল কিওয়ার্ড
শর্ট টেইল কীওয়ার্ড বলতে এক বা দুই শব্দের কিওয়ার্ডকে বুঝায়। অর্থাৎ আপনি যদি গুগলে Mobile লিখে সার্চ করেন তাহলে সেটা হলো শর্ট টেইল কিওয়ার্ড। এ ধরনের কিওয়ার্ডের সার্চ ভলিয়ম অনেক বেশি থাকে অর্থাৎ এ ধরনের কিওয়ার্ড মানুষ বেশি সার্চ করে, তবে এ ধরনের কীওয়ার্ড ব্যবহার করে র্যাংকিং এ যাওয়া অনেক কঠিন ব্যাপার কারণ এর কম্পিটিশন অনেক বেশি থাকে।
লং টেইল কিওয়ার্ড
লং টেইল কীওয়ার্ড বলতে তিন বা তার অধিক শব্দের সমষ্টিকে বুঝায়। অর্থাৎ আপনি যদি গুগলে Best apps for students লিখে সার্চ করেন তাহলে সেটা হবে লং টেইল কীওয়ার্ড। লং টেইল কিওয়ার্ডে সার্চ ভলিয়ম অনেক কম থাকলেও এর কম্পিটিশন কম যা এর একটি ভালো দিক। এছাড়াও এর দ্বারা আপনি টার্গেটেড অডিয়েন্স পাবেন বলে আশা করা যায়।
এলএসআই কিওয়ার্ড
এলএসআই কীওয়ার্ড হচ্ছে আপনি যে কিওয়ার্ড লিখে গুগলে সার্চ করবেন সেই কিওয়ার্ড সম্পর্কিত অন্য কোন কিওয়ার্ড। আপনি যদি mobile price লিখে গুগলে সার্চ করেন তাহলে mobile price 2022 হচ্ছে এলএসআই কিওয়ার্ড।
কিওয়ার্ড কত ধরনের?
কিওয়ার্ড অনেক ধরনের হয়। সব ওয়েবসাইটের জন্য সব ধরনের কীওয়ার্ড প্রয়োজন নেই, ওয়েবসাইটের ধরন অনুযায়ী কীওয়ার্ড নির্বাচন করতে হয়। ই-কমার্স ওয়েবসাইটের জন্য এক ধরণের কীওয়ার্ড আবার ব্লগ সাইটের জন্য আরেক ধরনের কীওয়ার্ড প্রয়োজন। এখানে আমি নয় ধরনের কীওয়ার্ডের নাম উল্লেখ করলাম। সেগুলো হলো:-- Product or Service keyword
- Brand Keyword
- Modifier keyword
- Entity Keyword
- Geographic keyword
- Demographic Keyword
- Call To Action Keyword
- Educational Keyword
- B2B keyword
Product or Service keyword
যখন কেউ search ইঞ্জিনে কোন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে কোন কিছু লিখে search করে তখন সেটাকে product or service keyword বলে। যেমন ধরেন কেউ যদি গুগলে iPhone 13 pro max লিখে সার্চ করে তাহলে সেটা হবে প্রোডাক্ট কীওয়ার্ড আবার কেউ যদি healthcare লিখে সার্চ করে তখন সেটাকে সার্ভিস কিওয়ার্ড বলবে।
Brand Keyword
যখন কেউ কোন ব্র্যান্ড বা ব্র্যান্ডের পণ্য বা সেবা সম্পর্কে সার্চ করে তখন সেটাকে ব্র্যান্ড কীওয়ার্ড বলে। যখন কেউ tv লিখে search করে তখন সেটা প্রোডাক্ট কিওয়ার্ড কিন্তু যখন কেউ walton tv লিখে সার্চ করে তখন সেটা ব্র্যান্ড কিওয়ার্ড কারণ walton একটি ব্র্যান্ড।
Modifier keyword
একটি সাধারণ শব্দ যখন ভিন্ন নামে সার্চ করা হয় কিন্তু তা একই অর্থ প্রকার করে তখন তাকে মডিফায়ার কিওয়ার্ড বলে। যেমন কেউ যদি letest smartphone লিখে search করে তখন সেটা মডিফায়ার কিওয়ার্ড।
Entity Keyword
বাস্তবে অস্তিত্ব আছে এমন কোন কিছু যখন search করা হয় তখন সেটাকে ইনটিটি কীওয়ার্ড বলে। যেমন কেউ যদি mobile shop, high school, কিংবা এমন অস্তিত্বশীল কোন কিছু লিখে search করে তখন সেটাকে entity Keyword বলে।
Geographic keyword
সার্চ করার সময় যদি কোন জায়গা বা স্থানের কথা উল্লেখ করা হয় তাহলে সেটাকে জিওগ্রাফিক কিওয়ার্ড বলে। কেউ যদি mobile shop in dhaka লিখে search করে তখন সেটাকে জিওগ্রাফিক কিওয়ার্ড বলে কারণ এখানে একটা লোকেশনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
Demographic Keyword
যখন কোন ডেমোগ্রাফিক বিষয় সার্চ করা হয় তখন তাকে ডেমোগ্রাফিক কিওয়ার্ড বলে। যেমন মহিলাদের জন্য যদি ব্যাগ সার্চ করা হয় তাহলে এভাবে সার্চ করা হবে hand bag for women, আর বাচ্চাদের জন্য সার্চ করলে school bag for kids এরকম ভাবে বয়স, জেন্ডার পার্থক্য করে search করলে তাকে ডেমোগ্রাফিক কীওয়ার্ড বলে।
Call To Action Keyword
যখন কেউ কোন কিছু কেনার জন্য search করে তখন তাকে কল টু অ্যাকশন কীওয়ার্ড বলে। যেমন কেউ যদি buy mobile অথবা subscription Netflix এ ধরনের কীওয়ার্ড লিখে সার্চ করে তখন তাকে call to action keyword বলে।
Educational keyword
যখন কেউ কোন কিছু সম্পর্কে জানার জন্য সার্চ করে তখন সেটাকে এডুকেশনাল কীওয়ার্ড বলে। যেমন কেউ যদি এটা লিখে সার্চ করে যে, how to make a cup of tea তখন সেটা হবে educational keyword
B2B keyword
B to B মানে Business to Business অর্থাৎ কেউ যদি ব্যবসা করার জন্য কোন পাইকারি বাজার লিখে সার্চ করে তখন সেটাকে B2B keyword বলে। যেমন কেউ যদি t-shirt wholesale লিখে search করে তাহলে এটা হবে B2B keyword
কীওয়ার্ড রিসার্চের জন্য প্রয়োজনীয় টুলস
- Keyword Generator
- Keyword Sheeter
- Answer the Public
- Keyword Surfer
- Keyworddit
- Questiondb
- Bulk Keyword Generator
এখানে উল্লেখিত টুলসগুলো ফ্রী ও পেইড দুই ভাবেই ব্যবহার করা যায়, তবে ফ্রী তে তেমন সুবিধা পাওয়া যায় না, আপনি যদি পেইড ভাবে এগুলো ব্যবহার করেন তাহলে এর সবগুলো ফিচারই ব্যবহার করতে পারবেন, যা আপনার কীওয়ার্ড রিসার্চকে আরো সহজ করে দিবে।
ওয়ার্ড রিসার্চের পূর্বে যে বিষয়গুলো জানতে হবে
Niche
Niche হলো ব্লগ বা ওয়েবসাইটের টপিক বা ক্যাটাগরি। আপনি যে বিষয় নিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন সেই বিষয়টিই হলো আপনার নিশ। আপনি যদি টেকনোলজি বিষয়ক আর্টিকেল প্রকাশ করেন তাহলে আপনার নিশ হলো টেকনোলজি, একই ভাবে শিক্ষা নিয়ে কাজ করলে নিশ হবে শিক্ষা।
Search Volume
কিওয়ার্ড রিসার্চের জন্য Search Volume গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, সার্চ ইঞ্জিনে মানুষ কোন কিওয়ার্ড কি পরিমাণে সার্চ করে সেটির পরিমাপ সংখ্যাই হলো সার্চ ভলিয়ম। Search Volume যতো বেশি থাকবে কিওয়ার্ড র্যাংক করা ততো বেশি সহজ হবে। কিওয়ার্ড রিসার্চ করার সময় চেষ্টা করবেন যে কিওয়ার্ডের সার্চ ভলিয়ম বেশি সেই কীওয়ার্ড ব্যবহার করার।
CPC
CPC এর পূর্ণ রূপ হলো Cost Per Click । গুগল অ্যাডওয়ার্ড দিয়ে গুগলে অ্যাড দিয়ে যেসব কীওয়ার্ড সার্চ রেজাল্টের উপরের দিকে আনা হয়, সেগুলোতে ক্লিক পড়লে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কাটবে। তবে যে যতো বেশি টাকা তো দিবে তার কিওয়ার্ড ততো উপরে থাকবে আর এটাই হলো সিপিসি। কোন কিওয়ার্ডের সিপিসি যতো বেশি হবে সেটি র্যাংক করানো ততো কঠিন হবে।
ইন্টারভিউ এ ভালো করার টিপস ও ট্রিকস
SEO difficulty
SEO difficulty কে Keyword difficulty ও বলা হয়। কোন কীওয়ার্ডকে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করানো কতটা কঠিন সেটার পরিমাপকেই এসইও ডিফিকাল্টি বলে। এটিকে চারটি স্তরে ভাগ করা হয়।
১. ০-১০ ( সহজ )
২. ১১-৩০ ( মিডিয়াম )
৩. ৩১-৭০ ( কঠিন )
৪. ৭১-১০০ ( খুব কঠিন )
All in Title এবং All in URL
All in title হলো কোন কীওয়ার্ড ওয়েবসাইটের টাইটেলে কতজন মানুষ ব্যবহার করেছে এবং All in URL হলো কোন কিওয়ার্ড কতজন মানুষ তাদের ওয়েবসাইটের টাইটেলে ব্যবহার করেছে। এটা বের করার জন্য search বক্সে গিয়ে allintitle: লিখে কিওয়ার্ডটি লিখবেন যেমন allintitle:bangla blogging এমনি ভাবে allinurl: bangla blogging লিখে সার্চ করার পর সার্চ বক্সের নিচে দেখতে পারবেন bangla blogging কিওয়ার্ডটি কয়টা টাইটেলে ব্যবহার করা হয়েছে।
কিভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করবেন?
- আপনি যে নিশ নিয়ে কাজ করেন সে নিশের কিওয়ার্ড থেকে চিন্তা ভাবনা করে কিছু কীওয়ার্ড আইডিয়া বের করবেন, প্রয়োজনে কীওয়ার্ড রিসার্চ টুলস ব্যবহার করে আপনার পছন্দ মত ৫০ থেকে ১০০ এর মতো কীওয়ার্ড নিবেন।
- তবে কীওয়ার্ড কম নিলে আপনার সময় কম লাগবে কিওয়ার্ড বেশি হলে সময় বেশি লাগবে, যতো বেশি কিওয়ার্ড রিসার্চ করবেন ততো ভালো ফলাফল পাবেন, এখন আপনি কতগুলো কিওয়ার্ড নিবেন সেটা আপনার ইচ্ছা। এরপর কিওয়ার্ডগুলোর Monthly Search Volume, CPC, All in title, All in URL, SEO Difficulty বের করবেন।
- যে কিওয়াডগুলোর SEO Difficulty ত্রিশের নিচে আসে সেগুলো মার্ক করবেন আর বাকিগুলো বাদ দিয়ে দিবেন।
- মার্ক করা কীওয়ার্ড থেকে যেগুলোর Monthly Search Volume বেশি সেগুলো মার্ক করবেন আর বাকিগুলো বাদ দিয়ে দিবেন।
- পুনরায় মার্ক করা কীওয়ার্ড থেকে যেগুলোর CPC অনেক কম সেগুলো মার্ক করবেন আর বাকিগুলো বাদ দিয়ে দিবেন।
- এরপর যেগুলোর All in title + All in URL কম দেওয়া আছে সেগুলো থেকে তিন/চার টি কিওয়াড মার্ক করবেন।
- সর্বশেষ যে কীওয়ার্ডগুলো মার্ক করবেন, সেগুলোই হলো আপনার কাঙ্খিত কিওয়ার্ড।